নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের বানারীপাড়ার চাখার ইউনিয়ন আধুনিক,উন্নত এক তিলোত্তমা ইউনিয়নে রূপান্তরিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে গত ১২ বছর এ ইউনিয়নে জনগুরুত্বপূর্ণ সিংহভাগ রাস্তা-ঘাট ও অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ সহ অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজে ৬ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাইক্লোন শেল্টার,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় বহুতল ভবন নির্মান করা হয়েছে। এ ইউনিয়নে এখন কাঁচা রাস্তা নেই বললেই চলে। যে দু’একটি রয়েছে তাও পাকাকরণের প্রক্রিয়া চলছে। এ ইউনিয়নের নয়াবাজারে নারীদের জন্য পৃথক ‘ওমেন মার্কেট’ নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গুয়াচিত্রা থেকে চাখার বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কের আদলে বেশ কয়েকটি ব্রিজ-কালভার্ট সহ পাকা প্রসস্থ সড়ক এবং চাখার বাজার থেকে মিরেরহাট ও লস্করপুর বাজার পর্যন্ত পৃথক দু’টি সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের শিমুল তলা থেকে খলিশাকোটা স্কুল হয়ে হয়ে চাখারের হক সাহেবের হাট পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত অভিবক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী বাংলার বাঘ খ্যাত শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হককে কেন্দ্র করে বৃটিশ শাসন আমলে বানারীপাড়া উপজেলার অজোপাড়াগাঁ চাখার গ্রাম গড়ে উঠেছিল শহর সাদৃশ্য এলাকা। উপ-শহর বললেও ভুল হবে না। সেখানে ১৯৪০ সালে চাখার ফজলুল হক কলেজ স্থাপিত হওয়ায় গোটা দক্ষিনাঞ্চলের লেখা পড়ার কেন্দ্র বিন্দু ছিল চাখার। পরবর্তীতে ওই কলেজটি সরকারিকরণ ও বেশ কয়েকটি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা করা হয়। এ কলেজে একসময় সরব ছাত্রসংসদও ছিলো সেখান থেকে অনেক যোগ্য নেতৃত্বও বের হয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকে রাজনীতি ও কর্মক্ষেত্রে পরবর্তীতে সুপ্রতিষ্ঠিত হন। ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি এদের মধ্যে দু’একজনের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও অভিষেক ঘটে।
একটি শহরের আদলে গড়া চাখারে গড়ে উঠেছে বালক ও বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। রয়েছে ডাকবাংলো,পুলিশ ফাঁড়ি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, উপজেলার একমাত্র সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস, একাধিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, ব্যাংক, বীমা, এনজিও অফিস, লঞ্চঘাট ও শের-ই বাংলা স্মৃতি জাদুঘর প্রভৃতি। রয়েছে ঐতিহ্যবাহি বাজার।বানারীপাড়া উপজেলা সদরে গাড়ী পৌঁছার আগেই চাখার থেকে গাড়ী চলাচল শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আশির দশকের গোড়ার দিকে চাখারের প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করা হয় ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল। তবে দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালের মূল ভবন এবং চিকিৎসক ও নার্সদের কোয়ার্টার সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ব্যপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শিগগিরই ভবনগুলো সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে ওই ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণ করা হতে পারে। এ উদ্যোগ বর্তমানে প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। এদিকে চাখার ইউনিয়ন হলেও সুযোগ সুবিধা ও উন্নয়নের দিক থেকে অনেকটা পৌর শহরের মতো। উপজেলার অপর ৭টি ইউনিয়নের চেয়ে ঐতিহ্যবাহি এ ইউনিয়নটি সবদিক থেকে উন্নত ও সমৃদ্ধ। এলাকার মানুষ চকচকা রাস্তায় নির্বিঘেœ চলাচল ও পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা পাওয়ায় দারুন খুশি। বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের স্মৃতিধণ্য পূণ্যভূমি চাখার সহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নকে উন্নত-সমৃদ্ধ আলোকিত ইউনিয়নে রূপান্তর করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলমের নানা কর্মপরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে চাখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খিজির সরদার বলেন একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে মহান নেতা শের-ই বাংলার চাখারের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পেরে তিনি ধন্য ও গর্বিত। চাখারকে তিলোত্তমা ইউনিয়নে রূপান্তর করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ভূমিকায় তিনি সহ চাখারবাসী কৃতজ্ঞ ও ঋনী বলেও জানান।
Leave a Reply